অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে গাজার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের মধ্যে ভাইরাসজনিত মারাত্মক সংক্রমণ হেপাটাইটিস ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ খবর আলজাজিরা।
শনিবার ইউএন অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অফ হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) এক বিবৃতিতে বলেছে, জাতিসংঘ পরিচালিত বেশকয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে হেপাটাইটিসের প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া গেছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজা শহর এবং এর উত্তরাঞ্চলে বাসিন্দাদের গৃহস্থালি ও খাবার পানির সংকট অব্যাহত রয়েছে। বেশিরভাগ পানি সুবিধাগুলো জ্বালানির ঘাটতির কারণে বন্ধ রয়েছে এবং কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে অনিরাপদ উত্স থেকে পানি খাওয়ার কারণে পানিবাহিত এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে, যা উদ্বেগজনক।
এ পরিস্থিতিতে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা, খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, আশ্রয়, স্যানিটেশন এবং ওষুধের জন্য জরুরি প্রয়োজনের ওপরও জোর দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
গাজা-ভিত্তিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা মুনির আল-বুর্শ বলেছেন, চিকিৎসা স্থান এবং জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে গাজা উপত্যকাজুড়ে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ধ্বংসের হয়েছে গেছে।
তার মতে, ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজা উপত্যকার ২৬টি হাসপাতাল ও ৫৫টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গাজা উপত্যকায় বিগত প্রায় ২ মাস ধরে বিদ্যুৎ নেই বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ এক আপডেটে বলছে, অবরুদ্ধ এলাকায় ১১ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে, এতে ৫২দিন ধরে বিদ্যুৎহীন রয়েছে গাজা।
গাজা ইলেকট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (জিইডিসিও) দেয়া তথ্য নিশ্চিত করে বলছে, গত ৮ অক্টোবর গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে ইসরায়েল। পরে জ্বালানির অভাবে গাজা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোও ১১ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
জাতিসংঘ জিইডিসিও’র দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে বলছে, গাজায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে, এ বছরের জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১৩ দশমিক ৩ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ ছিল।
প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সাথে এক সপ্তাহের মানবিক বিরতির পর গত শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় আবার বোমাবর্ষণ শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় গত শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ২ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬৫২ জন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারপর থেকেই গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গত দেড় মাস ধরে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজারের বেশি শিশু ও নারী রয়েছেন। এছাড়া কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
Leave a Reply